IPL শুরু থেকেই বিসিসিআই-এর প্রধান আয় সৃষ্টিকারী উৎস হিসেবে রয়ে গেছে। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই)-এর জন্য আইপিএল অন্যতম প্রধান অর্থ উপার্জনের উৎস হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিসিসিআই-এর মোট আয় ছিল ₹৯,৭৪১.৭ কোটি, যার মধ্যে শুধুমাত্র IPL থেকেই এসেছে ₹৫,৭৬১ কোটি — যা মোট আয়ের ৫৯% এরও বেশি।
ব্র্যান্ডিং ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা রেডিফিউশনের তথ্য অনুযায়ী, বিসিসিআই এই আয় অর্জন করেছে IPL পাশাপাশি ডব্লিউপিএল (WPL) ও বৈশ্বিক সম্প্রচার স্বত্বের মতো সম্প্রসারিত আয়ের উৎস থেকে।
রেডিফিউশনের একটি প্রতিবেদনে লয়েড ম্যাথিয়াস বলেন, “২০০৭ সালে বিসিসিআই এক সোনার হাঁস খুঁজে পেয়েছিল—আইপিএল, যা এখন বিসিসিআই-এর ১০০ শতাংশ অংশ। এই টুর্নামেন্টটি বিশ্বের সেরা, এবং এর সম্প্রচার স্বত্বের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। আইপিএল নিশ্চিত করে যে রঞ্জি ট্রফি পর্যায়ের খেলোয়াড়রাও একটি প্ল্যাটফর্ম পান। IPL যত বড় হবে, ততই লাভজনক হবে।”
IPL তিনি আরও যোগ করেন, বিসিসিআই বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে, যা আবার রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

রেডিফিউশন আরও জানিয়েছে, “ভক্তদের ভালোবাসা, বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ চুক্তি ও ক্রিকেটের গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে বিসিসিআই এক হাজার কোটি টাকার ইঞ্জিন গড়ে তুলেছে।” FY23-24 অর্থবছরে বিসিসিআই-এর ₹৯,৭৪১.৭ কোটি আয়ের পেছনে IPL ₹৫,৭৬১ কোটি আয় এবং ডব্লিউপিএল ও বৈশ্বিক সম্প্রচার স্বত্বের মতো নতুন আয়ের পথগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে।
আইপিএল ছাড়া মিডিয়া স্বত্ব থেকে বিসিসিআই-এর আয় ৩৬১ কোটি টাকা তবে বিসিসিআই-এর রাজস্বের একমাত্র উৎস IPL নয়। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ ও টুর্নামেন্টগুলোর সম্প্রচার স্বত্ব থেকে বিসিসিআই আইপিএল ছাড়া মিডিয়া স্বত্ব বাবদ ৩৬১ কোটি টাকা আয় করেছে।
রেডিফিউশন-এর প্রধান সন্দীপ গোয়েল বলেন, “বিসিসিআই রঞ্জি ট্রফি, দুলীপ ট্রফি কিংবা সি কে নাইডু ট্রফির মতো ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টগুলোকে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগিয়ে আইপিএল ছাড়া রাজস্ব বাড়াতে পারে। এছাড়া, বোর্ডের রিজার্ভে প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকা রয়েছে, যেখান থেকে শুধু সুদ বাবদই বছরে প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা আসে। এই আয় কেবল টেকসই নয়— স্পনসরশিপ, মিডিয়া চুক্তি ও ম্যাচডে আয়ের প্রসারে এটি বছরে ১০–১২ শতাংশ হারে বাড়বে বলেই ধারণা।”
প্রতিবেদনটি আরও জানায়, আইসিসি বিসিসিআই-এর উপর অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা নির্ভরশীল এবং নিজের মতো করে যথাযথভাবে রাজস্ব উৎপাদনে ব্যর্থ।
তবে একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইপিএলে যেকোনো ধরণের ব্যাঘাত বিসিসিআই-এর জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ বছর ‘অপারেশন সিন্দুর’–এর কারণে কিছু সময়ের জন্য IPLকার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী, অল্প সময়ের এই বন্ধের পরও IPL পারফরম্যান্স “হাঙ্কি-ডরি” অর্থাৎ স্বাভাবিক ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “বিষয়টা হলো, ধরুন IPL-ই যদি বিসিসিআই-এর রাজস্বের মূল অংশ হয়— তাতে কী? এটা কেবল একটি রাজস্ব পোর্টফোলিও; কিছু অংশ ভালো চলে, কিছু চলে না।”